বেশ কিছুদিন আগে শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফকে নিয়ে প্রথম আলোর প্রতিবেদনটি অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে কীভাবে জোসেফের নামে বিচারাধীন অসংখ্য মামলা থেকে কৌশলে তাকে রেহাই করানো হচ্ছিল, তার বিবরণ ছিল। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রায়কে যাবজ্জীবন করানো এবং সেই সাজাকে রাষ্ট্রপতির সম্ভাব্য ক্ষমা প্রদানের মধ্যে দিয়ে জোসেফকে দেশের বাইরে বের করে দেয়ার চেষ্টা সম্পর্কেও বলা হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে। সেই দুর্ধর্ষ প্লটটিকে নিখুতভাবে বাস্তবে পরিণত করা হয়েছে। জোসেফ রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেয়েছেন এবং ইতিমধ্যে দেশ ছেড়েছেন। এই জেনারেশনের অনেকেই হয়ত জানেন না, ঢাকা শহরে জোসেফ নামটি ভয়ংকর অপরাধের প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হত। খুন, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য অপরাধের অসংখ্য মামলা তার নামে ছিল। ঢাকায় অপরাধের রাজনীতিকীকরণ বা রাজনীতির অপরাধীকরণেরও প্রধান হোতা জোসেফ।
উপরের যে নিখুত চিত্রনাট্যটি মঞ্চায়নের কথা বললাম তার প্রযোজক বাংলাদেশ সরকার স্বয়ং। জোসেফের মত সন্ত্রাসীকে আইনের ফাক গলিয়ে এভাবে রেসকিউ করার কাজটিকে আমি ভয়ংকর অপরাধ বলে মনে করি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার বা রাষ্ট্র অপরাধ করলে শাস্তি দেবে কে? একটি ভিডিওতে দেখলাম, বগুড়ার একটি পার্কে এই সরকারের নিয়োজিত একজন ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ভয়ংকর সব অপরাধীকে শাস্তি দিচ্ছে। সেসব সন্ত্রাসীদের অপরাধ তারা প্রেম করছিল। ওই কমবয়সী ছেলেমেয়েগুলোকে গাদাগাদি করে রাস্তার মধ্যে বসিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হান্ডমাইক হাতে নিয়ে শাস্তি ঘোষণা করছিলো। ছেলেমেয়েগুলোর মুখ দেখে মনে হচ্ছিল, কিছুক্ষণের মধ্যে তাদের ব্রাশফায়ার করা হবে। ভবিষ্যতে এরকমটি ঘটলে খুব বিচিত্র হওয়ার কিছু থাকবে না।
বর্তমান সরকার ও এই সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কতিপয় প্রশ্ন করতে গিয়েও থেমে গেলাম। গতকাল ভারত প্রসংগে তিনি (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন- ভারতকে তিনি অনেককিছু দিয়েছেন কিন্তু প্রতিদান চান না। তিনি দিতে ভালবাসেন, চাইতে নয়। যে ব্যক্তি দুইটা রাষ্ট্রের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়কে এরকম অবলীলায় ব্যক্তিগত বিষয় ভাবতে পারেন, তার কাছ থেকে জবাবদিহিতা আদায় করে নেয়া কেবল মঙ্গলগ্রহবাসী এলিয়েনের পক্ষেই সম্ভব।
লিখেছেন বাকি বিল্লাহ
আরো পড়ুন চার দশকে মোট রাষ্ট্রপতির ক্ষমার চেয়ে লীগের এক দশকে বেশি ক্ষমার রেকর্ডঃ বাড়লো আরো এক