ধর্ষকের ফাঁসির আইনে ভিক্টিমের মৃত্যু ফ্রী

যাক, ক্রসফায়ারে দেয় নাই। আশা করি দিবেও না। আশা করি ফাঁসিতে ঝুলানোর রাগটাও কমে আসবে। ধর্ষককে মেরে ফেলা কোন কাজের কথা না।

শুধু মানবতাবাদী দর্শনের দোহাইয়ে বলছি না, একেবারে সহজ সরল ভুল পলিসি হয় এটা। ধরেন যদি ধর্ষক জানে ধরা খেলে নিশ্চিত মেরে ফেলবে, তা ক্রসফায়ারেই হোক বা ফাসিতে, তার কি ভিক্টিমকে জীবন্ত রাখার কোন ইন্সেন্টিভ থাকে? সার্ভাইভার যদি সুস্থ হয়ে ওঠে তখন ধর্ষককে চিহ্নিত করে দিতে পারে (যেটা ঘটসে এবার)। কাজেই এই ঝুঁকি এড়াইতে সে ভিক্টিমকে মেরে ফেলতে চাইবে, সেটাই স্বাভাবিক। আর মেরে ফেললে যে শাস্তি, ধর্ষণেও সেই শাস্তি, কাজেই মেরে ফেলাটাই অধিকতর যৌক্তিক না, যাতে ধরা খাবার সুযোগ কমে যায়?

জানি এই রাগের সময়ে এই কথাটা খুব বাজে শোনাচ্ছে। হয়তো আমি ভুলও করেছি কোন। তবে নানান বিশেষজ্ঞদের মতে আমি এটাই পেয়েছি এবং নিজের কাছেও এটা মনে হয়েছে। এরকম একটি ভয়াবহ অপরাধ হলে এইসব মাথায় থাকার কথা না৷ তবু মাথায় রাখা দরকার। রেপিস্টকে শাস্তি দিতে গিয়ে আমরা যাতে মার্ডারের কারণ হয়ে না যাই।

আর বিশ্বের অতিসংখ্যাগরিষ্ঠ গবেষকই দেখিয়েছেন যে ফাসি দিয়ে কখনও অপরাধ কমে না। পৃথিবীর যেসব দেশে ফাসি নাই, সেসকল দেশে সাধারণত অপরাধ কম হয়, যদি সেখানে ঠিকঠাক অপরাধের রিপোর্টিং বা খতিয়ান হয়ে থাকে তবে।

যাই হোক, এটা বলে কোন লাভ হবেনা। এই ক্রোধের সময়ে ক্রোধের প্রকাশ হিসেবেই হয়তো সবাই ফাসি চাইতেসে। কিন্তু এই যে আমাদের ক্রোধের প্রাথমিক ভাষাই হয়ে গেছে নরহত্যা, এটা হয়তো আমাদের দ্বিতীয়বার ভাবানো উচিত। হয়তো আমিই ভুল, তবে আজকাল “মেরে কেটে লবণ লাগায়ে দাও” টাইপ সরল সমাধান শুনলে সন্দেহ লাগে।

কি নৈতিক কি অনৈতিক সেখানে নয় না গেলাম, তবে কি কাজ করেনা আর কি কাজ করে সেটা তো এটলিস্ট ভাবা দরকার

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.